আজকে আমরা এমন একটি দেশ সম্পর্কে জানতে চলেছি যে দেশের লোকেরা ৩৬৫ দিনে ১ বছরের ক্যালেন্ডার আবিষ্কার করেছিল। যে দেশের নারী পুরুষ উভয়েই মেকাপের ব্যবহার করতেন। যে দেশটি নিম্ন পিরামিড এবং তাদের রাজা-বাদশাদের মুমির জন্য বিখ্যাত। এটি এমন একটি দেশ যে দেশের প্রাচীন লোকেরা মনে করত তারা মারা যাবার পর তাদের মৃতদেহ সংরক্ষণ করলে তাদের আত্মা ওই ফিরে আসে। আজকে আমরা উপস্থাপন করব পুরনো একটি সভ্যতার দেশ মিশর সম্পর্কে। আমরা সবাই পুরনো সভ্যতা সম্পর্কে জানতে চাই। পুরনো সভ্যতার ইতিহাস বলতে গেলে মিশরের কথাই প্রথমে চলে আসে। কারণ প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা একটি। –Fact About Egypt
মিশরকে ইংরেজিতে বলা হয় ইজিপ্ট। এর অফিসিয়াল নাম হচ্ছে আরব রিপাবলিক অফ ইজিপ্ট। এর মোট আয়তন ১০ লক্ষ ১০ হাজার ৪শ ৮ বর্গ কিলোমিটার। মোট জনসংখ্যা ৯ কোটি ৯৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭৪১ জন। মিশরের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর কায়রো। এর অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে আরবি। মোট জনসংখ্যার 94.9 শতাংশ হচ্ছে সুন্নী মুসলিম। ৫.১ শতাংশ লোক খ্রিস্টান এবং বাকি লোক অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। মিশরের কারেন্সি হল ইজিপশন পাউন্ড। পিরামিড এর জন্য পৃথিবীতে বিখ্যাত হচ্ছে মিশর। মিশরের সবচেয়ে পুরনো পিরামিড হল খোপন। এবং এটি সাত আশ্চর্যের মধ্যে একটি।
খ্রিষ্টপূর্ব ২৫৬০ সালে ফারাও রাজা নিজেই এই পিরামিড টি তৈরি করেন। ৪৪০০ বছর ধরে এটিই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু স্থাপত্য কর্ম। ১৮৮৯ সালে আইফেল টাওয়ার নির্মাণ এরপর এটি তার গৌরভ হারায়। শোনা যায় যে এটি তৈরিতে প্রায় এক লক্ষ লোকের ২০ বছর সময় লেগেছিল। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে পিরামিডের জন্য মিসর বিখ্যাত হলেও গণনার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি পিরামিড সুদানে রয়েছে। প্রায় 2 গুণ বেশি পিরামিড রয়েছে সুদানে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পিরামিড রয়েছে মেক্সিকোতে। আপনারা জেনে থাকবেন যে পিরামিড ছাড়াও মমি বানানোর নাম মিশরে রয়েছে। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে মিশরের মানুষরা মনে করত তারা মারা যাওয়ার পর তাদের মৃতদেহ সংরক্ষণ করলে তাদের আত্মা ওই মমির মধ্যে ফিরে আসে। তাদের ধারণা ছিল তারা মারা গিয়েও বেঁচে থাকতো মমিতে। তাই তারা এভাবে মৃতদেহ সংরক্ষণ করত।
প্রথমদিকে মমি সংরক্ষণ পদ্ধতি বেশ জটিল ছিল। তাই মৃতদেহ বেশিদিন সংরক্ষণ করা যেত না। তখনকার সময় কিছু অভিজ্ঞ ব্যক্তি এই কাজে বেশ দক্ষ ছিলো। তাদের কাজই ছিল শুধু মমি বানানো। প্রাচীন মিশরে বিড়ালকে খুব সম্মান করা হতো। বিড়াল মারার জন্য মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেয়া হতো। মিশরের রাজার মৃত্যুর পর তাদের দাস-দাসীদের মাথায় আঘাত করে বেহুশ বানিয়ে জীবিত কবর দিয়ে দেওয়া হতো এবং রাজার মমির সাথে বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসপত্র দিয়ে দেওয়া হতো।
মিশর আফ্রিকা ও এশিয়া দুই মহাদেশ এই অবস্থিত। এর বর্ডার গাঁজা স্ট্রেস ইসরাইল সুদান ও লিবিয়ার সাথে মিলেছে। মিশর এবং সুদান বর্ডার এলাকার মধ্যে প্রায় 2060 বর্গ কিলোমিটার এলাকা জমি বেওয়ারিশ পড়ে রয়েছে। এর ওপর কোনো দেশ অধিকার দেখায় না। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে মিশরের নাম এসেছে। অসংখ্য নবী রাসূলগণ এর জন্ম এবং কর্মক্ষেত্র এই মিশরে। এমনকি আল্লাহর দ্রোহী ফেরাউন এর জন্ম এই মিশরে। প্রাচীন মিশরে মহিলা এবং পুরুষ উভয়েই মেকআপ করে চেহারা রাঙিয়ে রাখত। কারণ তারা মনে করত এতে তাদের দেবতারা খুশি হবে। এবং খারাপ আত্মারা তাদের থেকে দূরে থাকবে। প্রাচীন মিশরের চিকিৎসকরা বর্তমান এর মত আলাদা আলাদা রোগের চিকিৎসা করত। অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন রোগের জন্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞ।
মিশরের অধিকাংশ এলাকা মরুময়। নীলনদ দেশটিকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে। প্রাচীনকাল থেকেই নীলনদ মিশরীয় জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মিশর শব্দটি আরবি শব্দ। যার অর্থ সরকার ও আইন কানুন বিশিষ্ট রাষ্ট্র। মিশরের বেশিরভাগ অংশ আফ্রিকার মধ্যে পড়েছে। মিশরের ভূমি খুবই উর্বর যার ফলে প্রচুর শস্য উৎপাদিত হয় এখানে। এজন্য একে কৃষি তৃণভূমি ও বলা হয়।
আরো দেখুনঃ
- মানবদেহ সম্পর্কে অজানা তথ্য
- হায়েনা সম্পর্কে অজানা তথ্য
- গুগল সম্পর্কে অজানা তথ্য -যা সবার জানা প্রয়োজন
- ভারত সম্পর্কে অজানা তথ্য -১৪২ কোটির বেশি জনসংখ্যা
- ছেলেদের সম্পর্কে অজানা তথ্য- সাইকোলজিকাল ফ্যাক্ট
- পৃথিবী সম্পর্কে অজানা তথ্য- ছিলো ১ টি মহাদেশ ও ১ টি মহাসাগর
- চার্লি চ্যাপলিন সম্পর্কে অজানা তথ্য, মৃত দেহ চুরি হয়ে যায় কবরস্থান থেকে
- দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে অজানা তথ্য এর বিস্তারিত
- গাধা সম্পর্কে অজানা তথ্য, ৬০ মাইল দূরেও যোগাযোগ করতে পারে
- দুবাই সম্পর্কে অজানা তথ্য -অর্ধেক নাগরিকই ভারতীয়
- ঘোড়া সম্পর্কে বিস্ময়কর ও অজানা তথ্য