জার্মান সম্পর্কে অজানা ও মজার কিছু তথ্য

জার্মানি সম্পর্কে অজানা ও মজার কিছু তথ্য

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন। আজকে আমরা এমন একটি দেশ সম্পর্কে জানব যে দেশে জেলখানা থেকে পালানো কে অপরাধ হিসেবে মনে করা হয় না। এটাকে মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতি হিসেবে মনে করা হয়, যে দেশে জনবহুল এলাকায় ধূমপানকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে মনে করা হয়, কিন্তু মদ্যপানকে স্বাভাবিকভাবে দেখা হয। যে দেশের লোকেরা সকালের নাস্তায় স্যান্ডউইজকে বেশি প্রাধান্য দেয়। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমরা কথা বলব পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী একটি দেশ জার্মানি সম্পরর্কে।Facts about Germany

জার্মানির অফিসিয়াল নাম ফেডারেশন রিপাবলিক অফ জার্মানি। জার্মানের জনসংখ্যা ৮ কোটি ২০ লাখ, জার্মানের রাজধানী এবং সবথেকে বড় শহর বার্লিন। জার্মানির কারেন্সির নাম ইউরো । এক ইউরো সমান বাংলাদেশি টাকায় ৯৮.৬৩ টাকা। ইঞ্জিনিয়ারিং হিসাব মতে পৃথিবীর শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি একটি। এদের অসম্ভব সুন্দর কাজগুলোর মাধ্যমেই এরা হয়েছে অন্যতম। টেকনোলজিতে জার্মানি অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।

পৃথিবীর অনেকগুলো বড় বড় কোম্পানি যেমন, মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ এসব জার্মানির কোম্পানি। আর পৃথিবীর সর্বাধিক গাড়ি বিক্রেতা কম্পানি ফক্স ওয়াগন জার্মানির কোম্পানি। আর ফক্স ওয়াগণ বছরে প্রায় 4 কোটি গাড়ি বানিয়ে থাকে। আর এই কম্পানি এতই বড় যে এখানে কর্মরত লোকেরা একই স্থান থেকেথেকে অন্য স্থানে যাতায়াতের জন্য সাইকেল ব্যবহার করে থাকেন । বুলেট ট্রেন বেশ কয়েক বছর ধরেই জার্মানিতে চলছে।

বন্ধুরা জার্মানির অটোবান সম্পর্কে যদি কিছু না বলি তাহলে পোস্টটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। জার্মানের অটোবান একপ্রকার হাইওয়ে সিস্টেম। এখানে মজার ব্যাপার হলো এটাই যে এখানে গতিরোধক বলতে কিছুই নেই আপনার যত গতিতে ইচ্ছে আপনি গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবেন। কোন প্রকার ভয় ভীতি ছাড়া, কারণ এটা পৃথিবীর সবথেকে নিরাপদ হাইওয়ের গুলোর মধ্যে একটি।

জার্মানিতে যদি কোন অপরাধি জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করে, জার্মান সরকার তাকে কোন সাজা দেয় না। কারণ তারা মনে করে প্রতিটি মানুষেরই স্বাধীনতার হক রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সেখানে এত পরিমান লোক মারা গিয়েছিল যে ৭০% মহিলারাই বিধবা হয়ে গিয়েছিল। এদের ইতিহাস খুবই কষ্টদায়ক, জার্মানি তাদের হিটলারের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত, হিটলার এবং তার শূন্যতা একটি বিশেষ ভঙ্গিমায় স্যালুট করত।

এটাকে বলা হয় নাদে স্যালুট, জার্মানিতে যদি কেউ এই নাদে স্যালুট করে, তবে তার তিন বছরের জেল হয়। কারণ হিটলার ২ কোটি লোকের মৃত্যুর কারণ, সে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ ইহুদী হত্যা করেছিল। বেঁচে থাকা ইহুদি গুলো দেশ ছেড়ে ইউরোপ পালাতে শুরু করেছিল, যখন তারা ফিলিস্তিনের শরণার্থী হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে এত বেশি বোমা রাখা হয়েছিল যে আজ পর্যন্ত প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজারেরো বেশি বোমা ডিফিউজ করে দেওয়া হয়।

এখানকার সৈনিকদের এমন স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে যে যদি তাদের এমন অর্ডার মিলে যে এতে মানুষের জান বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে তবে তারা এই কমান্ড না মানলেও পারবে। জার্মানিতে এডুকেশন সম্পূর্ণ ফ্রি, এমন কি বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য লেখাপড়া সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেয়া হয়েছে।জার্মানিতে জিডিপির অবস্থান চার নাম্বার ,জার্মানিতে এত কম জনসংখা নিয়েও পৃথিবীতে তারা তাদের অবস্থান শক্ত করে ফেলেছিল।এখানে পৃথিবীর সব থেকে বেশি জু রয়েছে,এখানকার রাজধানী বার্লিনে বার্লিন র চিকেন জুতে ১৫০০র বেশি প্রজাতির পশু পাখি রয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ লোকই ঈসা নবীর অনুসারী।

মোট জনসংখ্যার ৫৯.৩ শতাংশ খ্রিস্টান এছাড়াও, ৫.৫% মুসলিম, ও ৮% অন্যান্য ধর্মের অনুসারী বসবাস করে। এদেশ সাইন্স ও টেকনোলজিতে এত পরিমান উন্নত যে এরা জাপানের সাথে টক্কর দিতে পারে। পৃথিবীর সব থেকে বিখ্যাত এবং ফেমাস কোম্পানি এডিটাস এবং ফিওমা শুরু জার্মানিতেই। শুরুতে কোম্পানিটি দুই ভাইয়ের ছিল তখন কোম্পানিটির নাম ছিল রেসলার ব্রাদার্স শু ফ্যাক্টরি।

১৯৪৮ সালে দুই ভাইয়ের মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে এবং দুটি বড় কোম্পানিতে বিভক্ত হয়েছে একটির নাম এডিডাস এবং অন্যটি ফিয়ামা নামে। জার্মানের লোকেরা হ্যালোর বদলে তাদের নাম বলেই কথাবার্তা শুরু করে। পৃথিবীর প্রথম পত্রিকা জার্মানিতে শুরু হয়েছিল। আজও জার্মানিতে সবথেকে বেশি বইপত্র ছেপে থাকে। জার্মানিতে জন্মের হার খুবই কম গত ১০ বছরে এদের জনসংখ্যা দুই লাখ কমে গেছে। যার মেয়েরা গর্ব করে থাকে যে তারাই পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ।

ইউরোপের প্রথম অর্থনৈতিক শক্তি হচ্ছে জার্মানি, তারা এতটাই বিয়ার উৎপাদন করে যে রপ্তানিতে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রায় 300 ব্র্যান্ডের বিয়ার তারা উৎপাদন করে। গরে দুই শতাংশ লোকের মধ্যে জার্মানিদের সেলফোন নেই। সারা পৃথিবীতে প্রায় 100 মিলিয়ন লোক জার্মানি ভাষায় কথা বলে। মুলার হচ্ছে জার্মানিদের সবথেকে প্রিয় নিক নেম। এছাড়া জনপ্রিয় ফুটবলের দেশ জার্মানি ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ অর্জন করে।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে জার্মানিরা যে বাজেটের টাকা প্রতি বছর তাদের রক্ষার কাজে খরচ করে ,সেই পরিমাণ টাকা আমেরিকানরা তাদের পালিত কুকুরের পেছনে খরচ করে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে এত পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে , সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তার পরিমাণ ৯৬ হাজার টন সোনার সমান।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাশিয়ান রেট আর্মিরা 13 থেকে ২০ লাখ মহিলাদের রেপ করেছিল। জার্মানিরা কেউ কাউকে হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ করে না। কারণ তারা মনে করে এটা দুর্ভাগ্যের চিহ্ন । জনপ্রিয় ফাস্টফুডের খাবার হ্যাম বার্গারের নাম তো সবাই শুনে থাকবেন , নাম করা এই বার্গারের নাম হয়েছে জার্মানির ছোট্ট শহর হাম থেকে।

তো বন্ধুরা জার্মানি সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য জানতে পেরে আপনাদের কেমন লেগেছে ? আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন,আর এ রকম আরো অজানা সব তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

আরো দেখুনঃ 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top