যদি প্রশ্ন করা হয় দিনের বেলায় তারা দেখেছেন কখনো! হয়তো অনেকেই বলবেন কখনোই না। কিন্তু আপনি জানেন কি আমাদের সূর্য টাই আসলে একটি মাঝারি আকৃতির তারা বা নক্ষত্র। পৃথিবী যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে ঠিক একই ভাবে সূর্য ও আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি কে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে।-Facts About Sun
সূর্য একটি বিশাল এবং শক্তিশালী পারমাণবিক চুল্লি। সূর্য প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ মিলিয়নটন হাইড্রোজেন গ্রহণ করে। প্রতি সেকেন্ডে সূর্য পারমানবিকিউ ফিউশন থেকে প্রায় ৯০ বিলিয়ন মেগাটন শক্তি উৎপন্ন করে। সূর্যের উজ্জ্বলতার কারণ হচ্ছে গ্যাস এবং জলন্ত নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন। সূর্য পৃথিবীর চেয়ে ৩,৩২,৯৪৫ হাজর গুণ বড়। মজার ব্যাপার হচ্ছে মহাকাশের সমস্ত গ্রহ একসাথে করলেও সূর্য তার থেকে ৭৫০ গুণ বড় হবে।
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি তে আমাদের সূর্যের চেয়েও অনেক বড় হাজার হাজার কোটি নক্ষত্র রয়েছে। আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বা মিল্ক হয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে সূর্যের দূরত্ব প্রায় ২৫ হাজার আলোকবর্ষ।
সূর্য ৭৪% হাইড্রোজেন ২৫% হিলিয়াম গ্যাস বাকি ১% অন্যান্য গ্যাস দ্বারা তৈরি। সূর্যের উপরি পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৬৫০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। এবং সূর্যের ভেতরের তাপমাত্রা ৩ কোটি ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। সূর্যের রং সাদা হলেও আমরা এটাকে হলুদ দেখি আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের নীল আলোর বিচ্ছুরণের কারণে।
সূর্যের আলো এবং তাপ পৃথিবীর প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য অপরিহার্য। পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় তার নিজ কক্ষপথের সঙ্গে ৬৬.১° বা ৬৬.২° কোণে হেলে থাকে। আর এর ফলেই ঋতু পরিবর্তন হয়। সূর্যের উপরিভাগের ওপর কলঙ্ক বা ছোপ দেখা যায়। প্রায় ৪৫ কোটি বছর ধরে সূর্য আলো দিয়ে চলেছে। সূর্য ছাড়া বৈচিত্র্যময় এই জীবজগৎ কোনদিনই সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।
সূর্যের বুকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়ামে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে সূর্যের তাপ উৎপন্ন হয়। সূর্য প্রতি সেকেন্ডে ২২০ কিলোমিটার গতিতে অবিশ্বাস্যভাবে দক্ষিণ করে। সূর্য ঘন্টায় প্রায় ৮২৮ হাজার কিলোমিটার গতিতে গ্যালাক্সি কে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যের একটি কক্ষপথ শেষ করতে ২৩০ মিলিয়ন বছর সময় লাগে।
প্রায় এক হাজার কোটি বছর এ ধরনের নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া চলার পরে সূর্যের মতো মাঝারি আকৃতির নক্ষত্রগুলো লাল দানব বা রেড জায়ান্ট এ পরিণত হয়। সূর্য পৃথিবীর চেয়ে আয়তনে প্রায় ১৩ লক্ষ গুণ বড়। অর্থাৎ সূর্যের মধ্যে আমাদের পৃথিবীর মতো ১৩ লক্ষ পৃথিবী রাখা যাবে অনায়াসে। এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাহলে ধারণা করা যাবে কি সূর্যের তাপমাত্রা কত! সূর্যের অভ্যন্তরে গড় তাপমাত্রা প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস।
পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব প্রায় নয় কোটি মাইল। সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড। কিন্তু এর মূল কেন্দ্র থেকে তাপ এর পৃষ্ঠে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় এক মিলিয়ন বছর। কোর এবং সূর্যপৃষ্টের মধ্য দূরত্ব ৭০০ হাজার কিলোমিটার।
সূর্য আমাদের সবচেয়ে নিকটতম নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে আমরা সূর্য প্রতিদিনই দেখতে পাই। বেঁচে থাকার জন্য সূর্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন প্রতি ১১ বছর পর সূর্য তার চুম্বক ক্ষেত্রকে উল্টো করে দেয়। যার অর্থ উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু পরিবর্তিত হয়। এটি তখনই ঘটে যখন সূর্য তার সৌর সর্বাধিক এবং সূর্যের সর্বাধিক ক্রিয়া কলাপের সময়কালে পৌঁছে। সূর্যের চুম্বকীয় শক্তি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিশালী। আমাদের পৃথিবীর মতোই সূর্য চলমান।
আরো দেখুনঃ
- মাকড়সা সম্পর্কে অজানা তথ্য
- সিংহ সম্পর্কে অজানা তথ্য
- বডি স্প্রে আতর এবং পারফিউমের মধ্যে পার্থক্য
- হাতি সম্পর্কে অজানা তথ্য -জেনে রাখুন এখনি
- বাদুর সম্পর্কে অজানা তথ্য -ঘন্টায় প্রায় ৬০০ পোকা খেতে পারে
- কাক সম্পর্কে ৩০ টি অজানা তথ্য
- মেসি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য -সর্বকালের সেরা এই খেলয়ার সম্পর্কে জানুন
- উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে অজানা তথ্য
- মুকেশ আম্বানি কত টাকার মালিক
- সাতক্ষীরা কি জন্য বিখ্যাত? জেনে নিন এই জেলার আদ্যপ্রান্ত
- ফেসবুক রিল অপশন বন্ধ করার নিয়ম
- জেফ বেজোস কত টাকার মালিক