ফেব্রুয়ারি ২০১৩, ২০ মিটার ডায়ামিটার এর একটি এস্ট্রয়েড পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করেছিল। এই এস্ট্রয়েড ১৯ কিলোমিটার পার সেকেন্ডে রাশিয়ার কাছে এসেছিল। ১৯ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে এসে এস্ট্রয়েড পৃথিবী থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার উপরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আনুমানিক ৭২০০ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং ১৫০০ মানুষ আহত হয়েছিল।
এই এস্ট্রয়েড ব্লাস্ট যদি পৃথিবীর সারফেস থেকে মাত্র 8 কিলোমিটার উপরে হতো তাহলে ২০১৩ তে সেই শহরগুলো ম্যাপ থেকে চিরজীবনের মত মুছে যেত। পৃথিবী থেকে আকাশের দিকে তাকালে ব্রহ্মাণ্ড আমাদের কাছে যতটাই শান্ত মনে হোক না কেন আসলে তা নয়।-Unknown Facts About The Universe
একটি আপেলের সাইজ থেকে শুরু করে বেশ কয়েক কিলোমিটার লম্বা এস্ট্রয়েড ব্রহ্মাণ্ডে অনবরত ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার মধ্য প্রতিদিন ছোট ছোট হাজার এস্ট্রয়েড পৃথিবীর এটমোস্ফেয়ার এ প্রবেশ করতেই থাকে। কিন্তু আমাদের পৃথিবী বর্দানরূপীয় ও এই বায়ুমণ্ডলের কারণে সেগুলি পৃথিবীর সারফেসে প্রবেশ করার আগেই বায়ুমন্ডলে ধ্বংস হয়ে যায়।
যদি এস্ট্রোয়েড এর আকার ষাট মিটার বা তার বেশি হয় তাহলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ওটাকে ধ্বংস করতে পারবে না। এবং ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়ে সেগুলি ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে।
৯ জানুয়ারি ২০১৭, যখন পুরো দুনিয়া নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিল ঠিক ওই সময় ২৫ থেকে ৩০ মিটার এর একটি এর একটি এসট্রোয়েড পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এসেছিল। কিন্তু ওই এসট্রয়েডটি চাদের মধ্যে আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ না করে চাঁদ এবং পৃথিবীর মাঝখান দিয়ে অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল।
এ ব্রহ্মাণ্ডে যেসব অ্যাস্ট্রয়েড ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা এই পৃথিবীকে ধ্বংস করার প্রবল ইচ্ছে রাখে। লক্ষ লক্ষ বছর আগে এই অ্যাস্ট্রোয়েড পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্ত করে দিয়েছিল। আমরা এখনো সুরক্ষিত আছি। এরপর আমরা আর কোন এসট্রয়েড এর শিকার হইনি। আর এর জন্য পুরোপুরি ভাবে দায়ী হচ্ছে আমাদের সৌরজগতের বৃহস্পতি গ্রহ। কারণ বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যাকর্ষণ শক্তি সেই সব অ্যাস্ট্রয়েডের রাস্তা বদলে দেয়।
এই ব্রহ্মাণ্ডে কেবল অ্যাস্ট্রয়েড এ আমাদের জন্য ভয়ঙ্কর নয়। কারণ এর থেকেও ভয়ানক এবং শক্তিশালী গ্রহ রয়েছে যারা আমাদের ব্রহ্মাণ্ডে ঘুরতে থাকে। এ সমস্ত গ্রহদের রোজ প্ল্যানেট ও বলা হয়। এই গ্রহগুলির নিজস্ব কোন কক্ষপথ নেই। তাই এরা নক্ষত্রের চারপাশে ঘোরে না। এরা মূলত আকাশ গঙ্গায় চক্কর কাটতে থাকে। বলা যেতে পারে এরা আকাশ গঙ্গায় ইচ্ছা স্বাধীনভাবে ঘুরতে থাকে।
সাধারণত রোজ প্ল্যানেট দুই রকমের হয়। প্রথমত হচ্ছে যখন কোন তারা বা নক্ষত্রের সৃষ্টি হয় তখনই এদের সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে ভিন্ন কোন গ্রহের ঘর্ষণের ফলে এদের সৃষ্টি হয়ে থাকে। অনেক সময় এমনও হয় যে নির্দিষ্ট তারার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে দুটো গ্রহের মধ্যে নিজেদের ধাক্কা লেগে যায়। তারপর ঘর্ষণের ফলে গ্রহের রাস্তা বদলে যায়। ফলে এরা সোলার সিস্টেম থেকে আলাদা হয়ে যায়।
এখন আমরা বুঝতে পারলাম রোজ প্ল্যানেট কি। রোজ প্লানেট অস্ট্রেরয়েড থেকে বেশি ভয়ংকর কারণ হচ্ছে। আমরা আকাশ গঙ্গার যেকোনো একটিভিটি কে ডিটেক্ট করতে পারি। নক্ষত্রের নিজস্ব আলো হয় কিন্তু গ্রহদের নিজস্ব কোন আলো হয় না। এই কারণে গ্রহদের ডিটেক্ট করা একটু ঝামেলা হয়ে যায়। যদিও গ্রহদের পরিক্রমা ডিটেক্ট করাই যায় কিন্তু ইচ্ছে স্বাধীন ঘুরতে থাকা গ্রহদের ডিটেক্ট করা খুবই মুশকিল।
এই মুহূর্তে পৃথিবী থেকে সবচাইতে কাছের যে রোজ প্ল্যানেট রয়েছে সেটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৭ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। তবে ব্রহ্মাণ্ডে রোজ প্ল্যানেট এবং অ্যাস্টোরয়েড এই দুটোই একমাত্র ভয়ানক বিষয় নয়। এর থেকেও বেশি ভয়ানক হচ্ছে শুটিং স্টার। এদেরকে হাইপার ভেলোসিটি স্টার বলা হয়ে থাকে।
আকাশে তারা খসে পড়ার কথা আমরা সবাই শুনি। এগুলো মূলত এসট্রয়েট বা রোজ প্লানেট মুভমেন্ট করে থাকে যা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের প্রবেশ করলে ধ্বংস হয়ে যায় এবং আলোকিত দেখায়। তবে শুটিং স্টার এর থেকেও অনেক বেশি ভয়ংকর।
একটি রোজ প্লানেট বা একটি এসট্রয়েড একটি গ্রহকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু একটি শুটিং স্টার পুরো একটি সৌরজগৎকেই ধ্বংস করে দিতে পারে।
যখন কোন তারা বা নক্ষত্র এর আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে আসে তখন এরা হাইপার ভেলোসিটি অর্জন করে ফেলে এবং এদের গতি একটি বুলেটের থেকেও তীব্র হয়ে থাকে। যখন কোন তারা বা শুটিং স্টার সৌরমন্ডলের পাশ দিয়ে অতিবাহিত হয় তখন তার গ্রেভিটির কারণে ওই সৌর মন্ডলের কোন একটি গ্রহ সেই সৌরজগতের বাইরে চলে যায়।
আর যদি সেই গ্রহ সৌরজগতের বাইরে চলে নাও যায় তারপরেও সেটি ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ খসে পড়া তারার গ্রেভিটি এর জন্য এসট্রয়েড এবং বাকি গ্রহগুলো এর পিছনে পড়ে যায়। যার ফলে সৌরজগতের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায় এবং একটি গ্রহের সাথে অপর গ্রহের ধাক্কা লাগে এবং এস্ত্রয়েড বৃষ্টির সৃষ্টি হয়।
যদি কোন হাইপার বেলোসিটি স্টার সৌরমন্ডলে প্রবেশ করে। তাহলে গ্রহদের মধ্যে ধাক্কা লাগার চান্স অনেক বেড়ে যায়। হাইপারভেলোসিটি স্টারের তেজ এমন হয় যে ওরা আকাশ গঙ্গার বাইরেও চলে আসে।
এগুলো হচ্ছে সৌরজগতের বা ব্রহ্মাণ্ডের কিছু ভয়ংকর বিষয় যেগুলো আমরা কেউ সম্মুখীন হতে চাই না। এগুলি ছিল এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার করা কিছু বিপদ সংকেত মাত্র। তবে এর বাইরেও অসংখ্য ভয়ংকর বিপদ মহা ব্রহ্মান্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যেগুলো সবার অজানা।
আরো দেখুনঃ
- বাঘ সম্পর্কে অজানা তথ্য
- নরওয়ে সম্পর্কে অজানা তথ্য
- পিঁপড়া সম্পর্কে অজানা তথ্য
- ইসরাইল সম্পর্কে অজানা তথ্য
- রাশিয়া সম্পর্কে অজানা তথ্য
- তাজমহল সম্পর্কে অজানা তথ্য -বন্ধ ঘরের রহস্য
- চীনের প্রাচীর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
- কানাডা সম্পর্কে বিষ্ময়কর কিছু তথ্য -সবারই জানা প্রয়োজন
- সিঙ্গাপুর সম্পর্কে বিষ্ময়কর কিছু তথ্য
- যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য !
- সাহাবী গাছ সম্পর্কে অজানা সব তথ্য এবং বিস্তারিত
Thanks for the article!